স্মরণীয় সুমন
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় তোমাকে চাই যখন জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার, আবার রক্ত জুড়ে রক্তের গলিতে উপগলিতে কথা আর সুর আবার মিছিল করে গেল কেন? জবাব খুঁজতে গিয়ে দেখি এই গানে কোথাও সময় চুমু খেয়ে গেছে, এ তো খবরের কাগজের পাতায় ফ্যাশন মডেলের ঠোঁট নয় যে দাগ চট করে উঠে যাবে। এই গানে একটা পুণ্য ‘অস্থিতি’ ছিল। বামফ্রন্টের তিনটি নির্বাচনী জয়ের পর বাঙালি মধ্যবিত্ত বুঝে গেছে আইনশৃঙ্খলার তেমন অবনতি হবে না; এখন দু’জনে চাকরি, মাতৃভাষা যেহেতু মাতৃদুগ্ধ সুতরাং ছেলেকে হরলিকস্ পানের জন্য ইংরেজি মাধ্যমে পাঠানোই সঙ্গত, হাত বাড়ালে পূর্ব কলকাতার চাঁদ ও অ্যাপার্টমেন্ট, বছরে দু’বার ভ্রমণ, সপ্তাহান্তে বিধিসম্মত মদ্যপান ও পরদারগমনবাসনা। দিল্লিতে অর্থনীতির মলাট পালটালো। মধ্যবিত্ত দেশ জুড়ে ঝলমল করে ওঠার সম্ভাবনায় বাড়িতে বসে দেখল যে টিভির পর্দায় ঝরে পড়ছে আকাশের প্রসিদ্ধ নীলিমা। ‘তোমাকে চাই’ গানটা একটা অস্বস্তি হয়ে ফুটে উঠল সেই আকাশে। শিশ্নোদরপরায়ণ বাঙালি জানল গানে তারও অধিকার ছিল একদা। রামপ্রসাদ-রবীন্দ্রনাথ-সলিল চৌধুরীর দেশে গান তো গোল্লায় যাচ্ছিল! সারা পৃথিবীর দেওয়াল কাঁপছে; পশ্চিমবাংলায় সীমানাহীন হয়ে উপচে পড়ল রাগের সাদা ফেনা। সরকার ভাঙাগড়া, অবরোধ, কারফিউ, বাহিরিয়া এল কারা মা কাঁদিছে পিছে... আর গান লেখা হচ্ছে- ‘তবে কেন পায় না বিচার নিহত গোলাপ’? ভাবা যায় এরকম দাদের মলম! আশি সালে জ্যোতিবাবু দ্বিতীয়বার শপথ নেবেন জেনেই হয়তো লেখা হল : লজ্জা! এ কি লজ্জা! মরে যাই এ কি লজ্জা! তুমি না এলে যে কাঁটাতে ভরে গো আমারি ফুলের শয্যা, মরে যাই এ কি লজ্জা! আসল লজ্জা তো আমাদের, যারা এই কামকাতরতা, এই চিৎকারকে গান বলেছিলাম। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে যদি এই গান সুকান্ত ভট্টাচার্যের ছোঁওয়া পেত, তবে এই একই শয্যা অনেক মর্মান্তিক হয়ে যেত। স্মরণ করুন ‘রানার’-এর সেই অবিস্মরণীয় বেদনা : ‘ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে’। কবিয়ালের সঙ্গে কবির যে পার্থক্য, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুকান্ত ভট্টাচার্যের সেই পার্থক্য। সুমন আবার আমাদের কানে কবিতার অধিকার তুলে দিলেন। তখনকার সুমন চট্টোপাধ্যায় ও আজকের কবীর সুমন কোনও আকস্মিকতা নয়; বরং বাংলা গানের প্রকৃত উত্তরাধিকার। সিনেমার নামে যারা সত্তর ও আশিতে গীতিকার সেজেছিলেন, তারাই অনধিকার প্রবেশকারী; ট্রেসপাসার। সুমনের গানের কাছে আমাদের প্রধান কৃতজ্ঞতা যে তাতে অযথা মেদুর হাম্বাধ্বনি অথবা জলকেলি নেই। অর্থাৎ ন্যাকামি নেই। সুমন ততটাই রোম্যান্টিক, যতটা মায়াকোভস্কির ‘পাৎলুনপরা মেঘ’ সপ্রেম; ‘স্তব্ধরাত্রে তুমি কেন বাইরে যাও’- সমর সেন এই চরণে যতটা রাজনৈতিক। আমাদের চশমা যখন ভ্রুসন্ধির ঘামে পিছলে গেছে, এসপ্ল্যানেড চত্বরে যখন হাতের অরণ্য, তখন আমরা সুমনকে খুঁজে পাই। ভয়ের কথা আবার বাংলা গান নির্বোধ কোমলতায় ফিরে যাচ্ছে। মানুষ স্তন্যপায়ী জীব। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক বাঙালির মতো কেউ সচিৎকারে ঘোষণা করে না। কেউ নিজের মতো করে থাকবে বা গুছিয়ে নেবে- এ নিয়ে বয়ঃসন্ধির পরে তো ভাবার দায় জাতীয় স্তরে নয়। সুমন ঠিক এখানেই আমাদের ভাসান যেন পুনরুত্থিত ভিক্টর হারা। মিছিলের মাথায় মেঘমায়া থাকতে পারে, কিন্তু ‘পাৎলুনপরা মেঘ’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলি, : ‘No senile tenderness does it hold’। আমরা তো ইতিহাসের সন্তান। আমাদের চলার পথে আপনার গান বাঁচুক সুমন। আমরা জানব রামপ্রসাদ-রবীন্দ্রনাথ-সলিল চৌধুরী আপনারও অগ্রজ। আইসক্রিমের বাটি
অথবা কথোপকথন কাজরি গোলাপের সঙ্গে পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত ১ একটু একটু করে এনে দেবো মেঘকণা,একটু একটু করে গান খরিত রসের ধারায় উড়ে আসবে কার্নিভালের পরি,রসজ্ঞানবান কাব্যপাঠ মাঝে মাঝে পদাবলিকার উপন্যাসিকা অলঙ্কৃতির দায় মন্দাক্রান্তায়,বসন্ততিলকে ছন্দঃপতনের,যতিভঙ্গের এনে দেবো চমৎকার বাগান হালকা উড়ে আসবেন রসকলাবিৎ রাত্রির খোঁপায় ২ কথোপকথনের দিকে ঝুঁকে পড়লাম আমি যে রাস্তায় হাঁটতে শুরু করলাম হবে হয়তো অলীক,কিন্তু আমার রঙপুর, ইয়া আল্লা ওই তো দেখা যায়,কলেজের অভিজাত চাঁদের পুকুর রোমাঞ্চকর কেননা আমার আব্বার বন্দনা নিশ্চিত এখানেই আছে,আর কেউ না জানলেও আল মাহামুদ জানতেন অপরিসীম মনখারাপের হ’তে পারে কাজরি ঘন ছায়াময়,ঝিরঝির বৃষ্টি অথৈ,আমি বললাম আমার শেষ যাওনের জায়গা ঐ তো বাংলাদেশ জিরো পয়েন্ট ঐ যে দাঁড়িয়ে আছেন বি এস এফ পোয়েটিকস্ থেকে দেখা যায় আমার আব্বা্র নিঃশ্বাস কাজরি প্রাণের নিঃশেষ বিষয়ের চারপাশে নতুন সম্পর্ক এঁকে দিলো রুঞ্জি আমার শোবার ঘর ছেড়ে
বিনয় মজুমদার আমার শোবার ঘর ছেড়ে আমি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। বারান্দার পাশ দিয়ে একটি মুকুট হেঁটে চলে গেল অতিশয় ধীরে, আমি মনোযোগ দিয়ে তার বস্তাবৃত অঙ্গ দেখলাম। এ মুকুট প্রৌঢ়া ফলে মুকুটের ফুল দুটি বেশ ঝুলে পড়েছে নিশ্চয়, আরো এ বয়সে ফুলে অনেক নখের দাগ নিশ্চয় লেগেছে মুকুট পরার কালে ফুল টেপবার ফলে, তবুও মুকুট তার ফুল কৌশলে কাঁচুলি দিয়ে বেঁধেছে এমনভাবে যাতে মনে হয় তার ফুল মোটেই ঝোলে নি আর বারংবার নিয়মিত মুকুট পরার ফলে নিশ্চয় মুকুট বেশ বড় হয়ে গেছে এই প্রৌঢ় বয়সে ও যদিও অবিবাহিতা আছে। |
মনের জানালায়নিয়মিত এই ব্লগটিতে লিখুন।এখান থেকে বাছাই লেখা 'এবং বিকল্প'-এর মুদ্রিত সংখ্যায় পুরোনো ব্লগগুলি
March 2013
শিল্প,সাহিত্য,সংস্কৃতিAuthorWrite something about yourself. No need to be fancy, just an overview. |